মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার ষোলটাকা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ দুল্লুভ আলী। বাবা, মা, বউ আর এক ছেলে নিয়ে পাঁচ জনের সংসার তাঁর। অনেক স্বপ্ন ছিল ভাল কিছু করবে কিন্তু সংসারের অভাব অনটনের কারণে সম্ভব হয়নি। লেখাপড়া না করে মনোযোগি হন চাষাবাদে। এদিকে ধান চাষে খুব বেশি লাভবান হতে না পারায় বাড়ির ৫০ শতকের পুরনো পুকুর ও ২৫ শতকের আর একটি ছোট পুকুর নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। তখন থেকে মাছ চাষের পাশাপাশি ২ একর জমিতে ধান চাষ করতেন। তখনও জানতেন না যে, পুকুরে মাছ চাষের পাশাপাশি পুকুরপাড়ে সবজি চাষ করেও লাভবান হওয়া যায়। পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতি থেকে ২৫,০০০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে মাছ চাষ এর পাশাপাশি দেশী শিং-মাগুর-পাবদা-গুলশা-কার্প মিশ্র চাষ ও পুকুর পাড়ে বছরব্যাপী সবজি চাষ প্রকল্প গ্রহণ করেন ।
সেই বছরে ৫০ শতক পুকুরে দেশীয় প্রজাতির শিং মাছ চাষ করে ৫২,০০০ হাজার টাকা লাভের পাশাপাশি বড় পুকুরের ৭ শতক পাড়ে শিম, কলা, মরিচ, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, শশা, পেঁয়াজ, রসুন, পেঁপেঁ, লাল শাকসহ অন্যান্য সবজি চাষ করে ৪ হাজার টাকার সবজি বিক্রিসহ সারাবছর সবজির চাহিদা মেটাতে সক্ষম হন ।
এই চিন্তা মাথায় রেখে তিনি তার ৩ একর ধানের জমি কেটে পুকুর খনন করেন এবং শুরু করেন মাছ এবং পুকুর পাড়ে সবজি চাষ। তার পুকুর দেখে মনে হয় এ যেন পুকুর নয় একটি সবজি বাগান।
প্রথমে তিনি ২ টি পুকুর দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ৩.৫ একরের ছোট বড় মিলে মোট ৫ টি পুকুরে শিং, মাগুর ও পাঙ্গাস মাছের মিশ্র চাষ এবং তেলাপিয়া চাষ করে আসছেন। এ পর্যন্ত লাভ করেছেন প্রায় ১.৮ লক্ষ টাকা। পুকুরে নিয়মিত সম্পূরক খাবার প্রয়োগ করার পাশাপশি যথাযথভাবে পরিচর্যা করে ৫-৬ মাসের মধ্যে ১ম ধাপে ১০ কেজি দেশী শিং প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা দরে ৫৫০০ টাকা এবং ২য় ধাপে ১৫ কেজি দেশী শিং প্রতি কেজি ৬০০ টাকা দরে ৯০০০ টাকা এবং কার্প মাছ ৮১,০০০ টা
কাসহ মোট ৯৫,৫০০ টাকার মাছ বিক্রয় করেন । এছাড়াও প্রায় ৭ কেজি মাছ পরিবারে খাওয়ার জন্য ব্যবহার করেন । সে মাছ বিক্রি করার টাকা দিয়ে আরেকটি পুকুর লিজ নেন। বাকী টাকা ছেলের লেখাপড়ার কাজে ব্যয় করেন। সে বর্তমানে অনেক সুখি। তার স্বপ্ন মাছ চাষ করে যে আয় হবে তা দিয়ে পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষের পরিধি বাড়ানো।